অক্সিজেন ও ১০ জরুরি পরীক্ষার খরচ নির্ধারণ
ডিসেম্বর ১৩
২৩:৩৫
২০২০
সংবাদ বাংলা: যে দশটি পরীক্ষার মূল্য নির্ধারণ করে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে সেগুলোর তালিকা দেওয়া হয়েছে হাই কোর্টে জমা দেওয়া প্রতিবেদনে। সেখানে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ আক্রান্তদের দশটি সাধারণ পরীক্ষা বার বার করার প্রয়োজন হয়। এর পাশাপাশি ডেঙ্গু রোগীদের সাধারণ কিছু পরীক্ষার সর্বোচ্চ মূল্য নির্ধারণের জন্য হাসপাতালগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে একটি খসড়া মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছিল। সবার সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে তা চূড়ান্ত করা হয়েছে।
CBC ৪০০-৬০০ টাকা/৫০০ টাকা
CRP ৬০০-৯০০ টাকা/৬০০ টাকা
LFT ৯৫০-১৬০০ টাকা/১০০০ টাকা
S. Creatinine ৩০০-৬৫০ টাকা/৪০০ টাকা
S. Electrolyte ৮৫০-১৪৫০ টাকা/১০০০ টাকা
D. Dimer ১১০০-৩২০০ টাকা/১৫০০ টাকা
S. Ferritin ১০০০-২২০০ টাকা/১২০০ টাকা
S. Procalcitonin ১৫০০-৪৫০০ টাকা/২০০০ টাকা
Ct Scan Chest ৫০০০-১৩০০০ টাকা/৬০০০ টাকা
Chest X-Ray Analog ৩০০-৫০০ টাকা/৪০০ টাকা
Chest X-Ray Digital ৫০০-৮০০ টাকা/৬০০ টাকা
অক্সিজেন সিলিন্ডারের মূল্য
অক্সিজেন সিলিন্ডার, রিফিলিং ও ব্যবহার মূল্যে নির্ধারণ বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাধারণত দুটি পরিমাণের অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ করা হয়ে থাকে। বাজারে ১ হাজার ৩৬০ লিটার বা ১ দশমিক ৩৬ কিউবিক মিটারের সিলিন্ডারের খুচরা মূল্য ১ হাজার ৪০০ টাকা। আর ৬ হাজার ৮০০ লিটার বা ৬ দশমিক ৮ কিউবিক মিটারের সিলিন্ডারের খুচরা মূল্য ১৬ হাজার ৫০০ টাকা।
রিফিলিংয়ের মূল্য
কর ও শুল্কসহ প্রতি কিউবিক মিটার অক্সিজেনের রিফিলিং মূল্য ৬৫ টাকা নির্ধারণের অনুমোদন চাওয়া হয়েছে অদিদপ্তরের পক্ষ থেকে। তবে সিলিণ্ডার পরিবহন ব্যয় এর বাইরে ধরা হবে।
হাসপাতালে অক্সিজেনের ব্যবহার মূল্য
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একক অক্সিজেন সিলিন্ডার ও মেনিফোল্ড অক্সিজেন সিলিন্ডার সিস্টেমে ২ থেকে ৫ লিটার অক্সিজেন ব্যবহারের জন্য ১০০ টাকা; ৬ থেকে ৯ লিটারের জন্য ১২৫ টাকা; এবং ১০ থেকে ১৫ লিটারের জন্য ১৫০ টাকা মূল্য নির্ধারণের অনুমোদন চাওয়া হয়েছে।
জেনারেটর ভিত্তিক সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেমে একজন রোগীর ২ থেকে ৫ লিটার অক্সিজেন ব্যবহারের জন্য ১২০ টাকা; ৬ থেকে ৯ লিটারের জন্য ৩০০ টাকা এবং ১০ থেকে ১৫ লিটারের জন্য ৩৫০ টাকা মূল্য নির্ধারণের অনুমোদন চেয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
লিক্যুইড অক্সিজেন ট্যাংক ব্যবহার করে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেমে একজন রোগীর ২ থেকে ৫ লিটার অক্সিজেন ব্যবহারের জন্য ১২০টাকা; ৬ থেকে ৯ লিটার ব্যবহারের জন্য ২৫০ টাকা; এবং ১০ থেকে ১৫ লিটার ব্যবহারের জন্য ৩০০ টাকা মূল্য নির্ধারণের সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে।
আর সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেমে হাইফ্লো নাজাল ক্যানুলা দিয়ে ৬০ থেকে ৮০ লিটার অক্সিজেন ব্যবহার করলে তার মূল্য ৫০০ টাকা নির্ধারণ করার অনুমোদন চেয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
আইসিইউ-সিসিইউ
অগ্রগতি প্রতিবেদনে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) ও করোনারি কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) স্থাপনের অগ্রগতির বিষয়ে বলা হয়েছে, দেশের যেসব জেলা হাসপাতাল সরকার ঘোষিত নতুন মেডিকেল কলেজের হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে, সে জেলাগুলোর মেডিকেল কলেজের জন্য পর্যায়ক্রমে ৫০০ শয্যার আলাদা হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়েছে, হচ্ছে ও হবে।
এ ধরনের ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালগুলোর বিছানা বিভাজনে ১৬ শয্যার আইসিইউ ইউনিট (১০ শয্যার আইসিইউ ও ৬ শয্যার এইচডিইউ বেড) এবং ২০ শয্যার সিসিইউ (১২ শয্যার সিসিইউ ও ৮ শয্যার পোস্ট সিসিইউ) অর্থাৎ সর্বমোট ৩৬ শয্যার আইসিইউ ও সিসিইউ স্থাপনের প্রস্তাব করে ডিপিপি প্রস্তুতের কাজ অনেকগুলো নতুন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্ষেত্রে শেষ হয়েছে, বাকিগুলোর কাজ চলমান আছে।
‘দ্য মেডিকেল প্র্যাকটিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিকস অ্যান্ড ল্যাবরেটরিস (রেগুলেশন) অধ্যাদেশ-১৯৮২’ যথাযথভাবে অনুসরণের নির্দেশনা চেয়ে হিউম্যান রাইটস লইয়ার্স অ্যান্ড সিকিউরিং এনভায়রনমেন্ট সোসাইটি অব বাংলাদেশের পক্ষে কোষাধ্যক্ষ মো. শাহ আলম ২০১৮ সালের জুলাইয়ে হাই কোর্টে এই রিট আবেদন করেন।
প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ওই বছরের ২৪ জুলাই হাই কোর্ট রুলসহ অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেয়।
এর ধারাবাহিকতায় চলতি বছর সেপ্টেম্বরে হাই কোর্ট বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফি (ইউজার ফি) নির্ধারণের অগ্রগতি জানাতে বলে। সেই সঙ্গে ১৯৮২ সালের মেডিকেল প্র্যাকটিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিকস অ্যান্ড ল্যাবরেটরিস (রেগুলেশন) অধ্যাদেশের বিধান যুগোপযোগী করে নতুন আইন প্রণয়নের অগ্রগতি জানতে চায়।
এর ধারাবাহিকতায় গত ১৩ অক্টোবর বিষয়টি শুনানির জন্য ওঠে। সেদিন রিট আবেদনকারীপক্ষ হেলথ রেগুলেটরি কমিশন গঠনের নির্দেশনা চেয়ে একটি সম্পূরক আবেদন করলে সে আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত রুল জারি করে।
হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবায় অব্যবস্থাপনা নিয়ে রোগীদের অভিযোগ তদারকির জন্য হেলথ রেগুলেটরি কমিশন গঠন করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয় রুলে।
স্বাস্থ্যসচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, পরিচালকসহ (হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহ) বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
এর মধ্যে আগের নির্দেশনা অনুযায়ী দেশের সকল জেলা সদর হাসপাতালে আইসইউ-সিসিইউ স্থাপন ও স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফি (ইউজার ফি) নির্ধারণ সংক্রান্ত অগ্রগতি প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সে প্রতিবেদন দেখেই রোববার আদেশ দিল হাই কোর্ট।
There are no comments at the moment, do you want to add one?
Write a comment