Sangbad Bangla 24

News

 শিরোনাম
  • সোনার দামে নতুন রেকর্ড, ভরি ১৩৫৬৬৪ টাকা সংবাদ বাংলা: সোনার দামে নতুন রেকর্ড করেছে। ভরি ১ লাখ ৩৫ হাজার ৬৬৪ টাকা। সর্বোচ্চ দামের নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করল। আগামীকাল বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে বলে...
  • পদ্মায় মুন্সিগঞ্জ বিক্রমপুর পরিব্রাজক ফোরামের নৌভ্রমণ চাষী সিরাজুল ইসলাম: পদ্মায় মুন্সিগঞ্জ বিক্রমপুর পরিব্রাজক ফোরামের নৌভ্রমণ নিয়ে কিছু কথা। গত ১৮ মার্চ ময়ূরপঙ্খি নাওয়ে পদ্মা ভ্রমণের সুখস্মৃতি। সকাল পৌনে সাতটায় ধানমন্ডি থেকে বাসে চেপে বসলাম। গুলিস্তানে এসে...
  • জবি অ্যাকাউন্টিং অ্যালামনাই কমিটির চতুর্থ সভা অনুষ্ঠিত সংবাদ বাংলা: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) অ্যাকাউন্টিং অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের কার্যনির্বাহী কমিটির চতুর্থ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় জবির অ্যাকাউন্টিং বিভাগের সেমিনার কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের সভাপতি কামরুল হাসান রিপনের...
  • মীরপুরে এক বেলা আহারের শীতবস্ত্র বিতরণ সংবাদ বাংলা: শীত বস্ত্র বিতরণ করেছে ‘এক বেলা আহার’ সংগঠন। শনিবার  মীরপুরে শরীফ শিক্ষা পরিবার স্কুলের ১৬০ জন শিক্ষার্থীর মাঝে  শীতবস্ত্র, কলম ও খাতা বিতরণ করা হয়। এসময় এলাকার বিশিষ্টজন...
  • এক বেলা আহারের শীত বস্ত্র বিতরণ সংবাদ বাংলা: প্রতিবন্ধী ২১৪ পরিবারের মাঝে শীত বস্ত্র বিতরণ করেছে সেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘এক বেলা আহার’। শনিবার সাভারের গান্দারিয়া গ্রামে এই শীত বস্ত্র বিতরণ করা হয়। এই গ্রামে ২১৪টি প্রতিবন্ধী পরিবার...

‘আপনাকে নিয়ে আপনি ভাবছেন তো’?

‘আপনাকে নিয়ে আপনি ভাবছেন তো’?
এপ্রিল ১৬
১৫:১২ ২০২০

মামুন রশীদ: এবারই প্রথম আমরা পহেলা বৈশাখ উদযাপন করছি অনাড়ম্বরভারে, ঘরে বসে। এই ঘরে বসে থাকা প্রয়োজনের তাগিদ থেকে, প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে। শুধু আমরাই নই, বিশ্বই  আজ ঘরবন্দি। কোন দৈত্য দানব নয়, মানুষকে ঘরে বন্দি করেছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। মানুষের সকল গর্ব আজ ধুলায় লুটিয়ে দিয়েছে এই অনুজীব। ল্যাটিন শব্দ ভাইরাস, বাংলায় বিষ, জীববিজ্ঞানের ভাষায় তাকে জীব হিসেবে বিবেচনা করা হবে কিনা এ নিয়েও রয়েছে বিতর্ক। অথচ সেই অনুজীব, যাকে জীবনুও বলা হয় না, বলা হয় বস্তু, সেই অকোষীয় অতি-আণুবীক্ষণিক বস্তু- যারা শুধুমাত্র পোষকের দেহের ভিতরেই বংশবৃদ্ধি করতে পারে- তারাই চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে বিশ^পরিব্রাজক হয়ে উঠেছে। তার প্রভাবেই আজ আমরা ঘরবন্দি। করোনাভাইরাস যার আনুষ্ঠানিক নাম কোভিড-১৯, তার প্রলয়নৃত্যে আজ লণ্ডভণ্ড সব। মানুষের অসহায় আত্মসমপর্ণ আর মৃত্যুর মিছিলের সামনে উলঙ্গ হয়ে পড়ছে আমাদের সকল গর্ব। মানুষ প্রায় চার লাখ কিলোমিটার দূরের উপগ্রহ চাঁদে গিয়েছে, আরও দূরের গ্রহ মঙ্গলে যাবো যাবো করছে। মহাবিশে^র রহস্য জানতে যান পাঠাচ্ছে, মহাকাশে স্টেশন বানিয়েছে, কোনো মহাজাগতিক প্রাণী আমাদের উদ্দেশ্যে কোনো সিগন্যাল পাঠায় কিনা তা ধরতেও আমাদের কতো প্রানান্ত চেষ্টা। আর এসবের সঙ্গে একে অন্যের ওপর আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা তো রয়েছেই। সেই আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টায়, আমিই সেরা-আমিই সব প্রমাণ করতে প্রাণঘাতী মারনাস্ত্র বানাতেও কত কসরত। অন্যকে টেক্কা দিয়ে পারমানবিক অস্ত্র বানিয়ে সেকি উল্লাস। এর সবই আজ থমকে গেছে কোভিড-১৯ নামের অনুজীবের কাছে। প্রবল পরাক্রান্ত মানুষ আজ কতোটা অসহায়, তা স্পষ্ট হয়ে ওঠে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জুসেপ্পে কন্তের একটি টুইটার মন্তব্যে। ইতালিতে যখন লাশের দীর্ঘ সারি, তখন তিনি টুইটারে লেখেন, ‘আমরা সমস্ত নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছি। আমরা শারীরিক ও মানসিকভাবে মারা গেছি। আর কী করতে হবে তা আমরা জানি না। পৃথিবীর সমস্ত সমাধান শেষ হয়ে গেছে। এখন একমাত্র সমাধান আকাশের কাছে’।
এরকম অসহায় পরিস্থিতিতে আমরা উদযাপন করছি আমাদের সবচেয়ে বড় উৎসব পহেলা বৈশাখ। উৎসবের সকল আনুষ্ঠানিকতা আগেই স্থগিত হয়েছে। কারণ এ সময়ে উৎসবের আনুষ্ঠানিকতার চেয়ে আমাদের ঘরে থাকাই জরুরি। কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে প্রতিষেধক আবিস্কারের আগে সুস্থ থাকার একমাত্র তরিকা ঘরে থাকা। আমরা যতো বেশি ঘরে থাকবো, যতো বেশি মানুুষের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলবো, ততো বেশি ভালো থাকবো, সুস্থ থাকবো। পুরো বিশ^ই এই তরিকা মেনে চলছে। তার ফলে মানুষ তার স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে বাদ দিয়ে ঘরে, প্রায় স্থবির জীবনে অভ্যস্ত হয়ে উঠছে। আমরাও এ থেকে বাদ নেই। সরকার ছুটি ঘোষণা করেছে, ধাপে ধাপে তা বাড়ানো হয়েছে। উদ্দেশ্য আমরা যেন ভালো থাকি। আর আমাদের এই ভালো থাকার মধ্য দিয়েই আজ প্রাণ ফিরে পাচ্ছে প্রকৃতি।
বৈশাখকে বলা হয় বাঙালির প্রাণের উৎসব। পহেলা বৈশাখ উদযাপনের ইতিহাস অনেক পেছনের। বৈশাখের উৎসব বলতেই একসময় ভেসে উঠতো গ্রামীন মেলা, হাতি-ঘোড়ার সাজ, তৈজসপত্র কেনার দৃশ্য। সেই উৎসবকে আমরা দিয়েছি নাগরিক রূপ। এবারে করোনা আমাদেরকে ঘরে রেখে উৎসবকে আবার প্রাকৃতিক করে তোলার সুযোগ দিয়েছে। বিজ্ঞানী নিউটনের সূত্র, ‘প্রত্যেক ক্রিয়ারই একটি সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে’ মেনেই যেন করোনা আজ আমাদের ঘরবন্দি করলেও প্রাণ ফিরে পাচ্ছে প্রকৃতি। যে প্রকৃতির ওপর আমরা এতোদিন নির্যাতন করেছি, যে প্রকৃতিকে শাসন করেছি, তাকে দাবিয়ে রাখতে ইচ্ছেমতো প্রকৃতির রূপ পরিবর্তন করেছি। আমাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা, যা প্রকৃতপ্রস্তাবে ছিল অনিয়ন্ত্রিত, তা ব্যহত হওয়ায় সেই প্রকৃতি আবার ফিরে পাচ্ছে নিজের রূপ। মাত্র সেদিনও দূষণে প্রকৃতির যে নাভিশ্বাস উঠেছিল, আজ তা কমতে শুরু করেছে। আমাদের রাজধানীর যে দূষিত বাতাস আমাদেরকে স্বাভাবিক শ্বাস নিতে বাধা দিচ্ছিল, আজ সেই বাতাসে প্রাণ ফিরেছে। নির্মল বায়ুর যে বর্ণনা অনেককাল ছিল বইয়ের পাতায়, তা আজ বাস্তবে দোলা দিতে শুরু করেছে। বসন্তের এই মাতাল সময়ে গাছে গাছে এসেছে নতুন পাতা, বসেছে ফুল ও পাখির মেলা। রাজধানীর ইট-কাঠের খাঁচায় মুক্ত পাখি দেখা যেখানে অসম্ভব মনে হয়েছে, আজ সেই মুক্ত পাখির গানেই ঘুম ভাঙছে। সাগর সৈকতে ফিরে এসেছে ডলফিন, বিরল প্রজাতির লালকাঁকড়া। সৈকতের বালুচরে ডিম পাড়তে উঠে আসছে সামুুদ্রিক কচ্ছপ। গাঙচিলের ঝাঁক উড়ে আসছে সৈকতে। করোনা আতঙ্কের মাঝেও এই যে প্রকৃতি ফিরে পাচ্ছে তার আদি-অকৃত্রিম রূপ, তা আমাদের জন্য নতুন শিক্ষা। জলবায়ু পরিবর্তনের যে কুফলের কথা বলতে বলতে জলবায়ুবিজ্ঞানী ও পরিবেশবাদীরা আমাদের সচেতন করার সকল চেষ্টায় বিফল হয়েছেন। সেই আমরাই আজ দেখতে পাচ্ছি আমাদের নিয়ন্ত্রিত জীবনের সুফল। তাপমাত্রা পরিবর্তনের ফলে স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে দ্রুত গতিতে গলে যাচ্ছিল হিমালয়ের বরফ, গলছিল মেরু অঞ্চলের বরফ। যাতে করে বাড়ছিল সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা। তলিয়ে যাবার শঙ্কায় ছিল বিশ্বের অনেক দেশ, অনেক দ্বীপ। গত কয়েক মাস ধরে বিশে^ চলে আসা লকডাউন, কারফিউয়ে আমরা ঘরে থাকতে বাধ্য হওয়ায় বন্ধ হয়েছে পৃথিবীর উষ্ণায়ণ। কমে আসছে পরিবেশ দূষণের মাত্রাও। এ দৃশ্য শুধু বাংলাদেশেই নয়, এ দৃশ্য পুরো পৃথিবীর। রাস্তাঘাটে মানুষের স্বাভাবিক উপস্থিতি নেই। মাত্রাতিরিক্ত যানবাহন নেই। কালো ধোঁয়া, তেল পোড়া গন্ধে বাতাস ভারি হওয়ার সুযোগ নেই, তাই বাতাসও দূষিত হওয়ার সুযোগ কম। কলকারখানার অধিকাংশই বন্ধ, থমকে আছে উৎপাদন, এতেও কমছে পরিবেশ দূষণের মাত্রা। কার্বণ নিঃসরণকারী দেশগুলোতেও কমেছে কার্বন নিঃসরনের পরিমাণ। যাতে পৃথিবীর পরিবেশের উন্নতি ঘটছে।
আমরা ঘর থেকে বেরুতে পারছি না, আমাদের স্বাভাবিক জীবন থমকে আছে, ব্যবসা-বাণিজ্য থমকে আছে, এ আমাদের অপূরণীয় ক্ষতি। কিন্তু এই অপূরনীয় ক্ষতির মাঝে প্রাকৃতিকভাবেও আমরা যে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ছিলাম, সেই ক্ষতির কিছুটা পূরণ হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তন আমরা কোনভাবেই রোধ করতে পারছিলাম না, কার্বন নিঃসরণ কোনভাবেই কমাতে পারছিলাম না, পৃথিবীর উষ্ণায়ন বন্ধ করতে পারছিলাম না, সেই অবস্থার উন্নতি হচ্ছে, এটিই আশার খবর। আমরা যে পরিস্থিতিতে ঘরবন্দি, নিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন করছি, তা স্বাভাবিক নয়। করোনাভাইরাসের প্রভাবের এই ভীতি আমাদের আতঙ্কিত করলেও, শিখিয়েছে অনেক। আজকের এই বিপদ একসময় কাটবে। পৃথিবীর মানুষ আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে পাবে। কিন্তু সেই ফিরে আসা জীবনেও যদি আমরা একইভাবে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারি, পরিবেশ ও প্রকৃতির প্রতি জলুম না করি, তাহলে আজকের এই সুস্থ ও নির্মল বায়ু তখনও বইবে। আমাদের বারান্দায় এভাবেই গান গেয়ে পাখিরা ঘুম ভাঙাবে। সৈকতে আমরা যখন সমুদ্রের সীমাহীন সৌন্দর্য উপভোগ করতে যাবো, তখন আমাদেরকে নির্মল আনন্দ দেবে সাগরের ডলফিনের দল। আজকের এই নিয়ন্ত্রিত জীবন আমাদের যে শিক্ষা দিচ্ছে, তা ধরে রাখতে পারলেই প্রকৃতি তার প্রাণচাঞ্চল্য দিয়ে আমাদের প্রাণশক্তি বাড়িয়ে দেবে। তাই ঘরে থেকে বৈশাখ উদযাপনের মধ্যেও আজ আমাদের জন্য বাড়তি আনন্দ আমাদের প্রকৃতি, আমাদের পরিবেশ। যা ফিরিয়ে দেবে সেই পৃথিবী, সেই শৈশব যেখান থেকে আমরা নতুন করে শুরু করতে পারবো হানাহানি মুক্ত ধর্মনিরপেক্ষ এবং অসাম্প্রদায়িক পৃথিবীর। দিবস কেন্দ্রিক উৎসবের বাইরে বেরিয়ে এসে আমরা আবার হয়তো ফিরে পাবো বারো মাসের তেরো পার্বণের বাঙালির জীবন থেকে নানা কারণে হারিয়ে যাওয়া উৎসবের প্রকৃত রং। ‘আমরা (সাংবাদিকরা) নিখুঁত নই, আমরা কারো পছন্দের ব্যক্তি নই, আমরা কখনো আপনাদের ধন্যবাদ চাই না; আমরা শুধু এটুকু নিশ্চিত হতে চাই যে আপনাকে নিয়ে আপনি ভাবছেন কি না’ মিরর ইউকে-তে ফ্লিট স্ট্রিট ফক্সের নামে প্রকাশিত নিবন্ধের এই লাইনটি অপ্রাসঙ্গিক হলেও উদ্ধৃত করে নতুন বছরের শুভেচ্ছায় সবাইকে বলতে চাই, আজকের এই পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নেই, আমাকে নিয়ে ভাবি, ঘরে থাকি।
লেখক: সাংবাদিক, কবি

০ Comments

No Comments Yet!

There are no comments at the moment, do you want to add one?

Write a comment

Write a Comment

Leave a Reply

ফটো গ্যালারি

This slideshow requires JavaScript.

কারবার স্মৃতিতে অনন্য হোসনি দালান

ঢাকাইয়া বনেদি খাবার