আরাস্তু খান পরাস্ত হলেন, ফের টালমাটাল ইসলামী ব্যাংক
সংবাদ বাংলা: এ যেনো যুদ্ধক্ষেত্র। কী না করতে পেরে সেনাপ্রধান পীঠটান দিলেন। দেশের সর্ববৃহৎ বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইসলামী ব্যাংকে ফের অস্থিরতা। বিগত এক দশকে যেই ব্যাংকটির সবসূচক ঊর্ধ্বগামী; হঠাৎ করেই বারবার ধাক্কা খাচ্ছে। কোনঠাসা জামায়াত শিবিরের তকমা লাগানো প্রতিষ্ঠানে গত বছর মালিকানায় ব্যাপক পরিবর্তন আসে। হুট করে শিল্পগ্রুপ ’এস আলম গ্রুপ’ ব্যাংকটির কর্ণধার বনে যান। সরকারের সাবেক সচিব আরস্তু খান, যিনি আবার আওয়ামী লীগের আমলা হিসেবে পরিচিত তিনি ব্যাংকটির চেয়ারম্যান হন। কিন্তু বিধিবাম। এক বছরের মাথায় আরাস্তু খান পরাস্ত হলেন। চেয়ারম্যান আরাস্তু খান পদত্যাগ করায় নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে ব্যাংকটির স্বতন্ত্র পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নাজমুল হাসানের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে। আরাস্তু খানকে মনোনয়ন করা আরমাডা স্পিনিং মিলের পক্ষে নতুন করে পরিচালক হয়েছেন নাজমুল হাসান। ইসলামী ব্যাংকের ওয়েবসাইট থেকে আরাস্তু খানের নাম সরিয়ে চেয়ারম্যান হিসেবে নাজমুল হাসানের নাম বসানো হয়।
তবে এতোসব ঘটনার পর নিজের পদত্যাগ নিয়ে সাংবাদিকদের আরাস্তু খান বলেন, কাজের চাপ সামলাতে না পেরে পদত্যাগ করেছি। ব্যাংকের কারণে পরিবারকে একেবারেই সময় দিতে পারছিলাম না। এ সময় তিনি আরো বলেন, ইসলামী ব্যাংককে ভালো অবস্থানে রেখে গেলাম। ব্যাংকটি ভবিষ্যতে আরো ভালো করবে— এটাই আশা করছি।
২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি ইসলামী ব্যাংকের মালিকানা ও পরিচালনা পর্ষদে বড় ধরনের পরিবর্তন আসে। ওই সময় ব্যাংকের তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মুস্তাফা আনোয়ারকে সরিয়ে পরিচালনা পর্ষদের প্রথম সভাতেই চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন আরাস্তু খান। তৎকালীন ভাইস চেয়ারম্যান আজিজুল হকও সেদিন পদত্যাগ করেন। এ ছাড়া ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ আবদুল মান্নান পদত্যাগ করায় ইউনিয়ন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল হামিদ মিয়াকে ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক করা হয়। সম্প্রতি তার মেয়াদ শেষ হওয়ায় মাহাবুব উল আলমকে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক করা হয়। অভিযোগ ব্যাংকটিকে জামায়াতে ইসলামীর নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত করা সম্ভব হয়নি।
ব্যাংকের অন্য একটি সূত্রে জানা গেছে, ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে নতুন পরিচালক হিসেবে যুক্ত হতে যাচ্ছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং বিভাগের শিক্ষক সেলিম উদ্দিন। প্রস্তাবিত নতুন চেয়ারম্যান নাজমুল হাসান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অনারারি অধ্যাপক। ১৯৭৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন নাজমুল। পরে তিনি উন্নয়ন অর্থনীতিতে মাস্টার্স এবং পিএইচডি ডিগ্রি নেন। ১৯৯৩ সালে পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক হওয়া নাজমুল একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন ইউনিভার্সিটিতেও কাজ করতেন। যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ে পরামর্শক হিসেবে কাজ করা এই অধ্যাপক সেখানে বিভিন্ন পিএইচডি কমিটিরও সদস্য ছিলেন। ডেনমার্কের রয়্যাল এগ্রিকালাচারাল অ্যান্ড ভেটেরিনারি ইউনিভার্সিটির অতিথি অধ্যাপকও ছিলেন তিনি।
There are no comments at the moment, do you want to add one?
Write a comment