এক মাস কোচিং সেন্টার বন্ধের নির্দেশ
সংবাদ বাংলা: এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরুর সাত দিন আগ থেকে শেষ পর্যন্ত এক মাস দেশের সব কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। পরীক্ষা সুষ্ঠু ও নকলমুক্ত পরিবেশে অনুষ্ঠানের জন্য আগামী ২৫ জানুয়ারি থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কোচিং সেন্টার বন্ধের এই ঘোষণা দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হবে। ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ড মিলিয়ে এবার মোট ২০ লাখ ৪৭ হাজার ৭৭৯ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেবে। সারা দেশে ৩ হাজার ৫১২টি কেন্দ্রে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে তীক্ষè গোয়েন্দা নজরদারির ব্যবস্থা থাকবে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে গুজব রটনাকারী শনাক্ত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যেকোনো ধরনের প্রতারক চক্রকে আইনে সোপর্দ করা হবে। এ বিষয়ে তিনি সবার সর্বাত্মক সহযোগিতা চান।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর মোট পরীক্ষার্থী ৮৭ হাজার ৫৫৪ জন কমেছে। আগের মতো এ বছরও পরীক্ষা শুরু হওয়ার কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকতে হবে। পরীক্ষাকেন্দ্রের আশপাশে জারি থাকবে ১৪৪ ধারা। পরীক্ষাকেন্দ্রে কেউ মোবাইল ফোন নিতে পারবে না। শুধু কেন্দ্রসচিব সাধারণ মানের একটি মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন। পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে খুদে বার্তা পাঠিয়ে কোন সেটের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়া হবে, সেটি কেন্দ্রসচিবকে জানানো হবে। বাংলা দ্বিতীয় পত্র এবং ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র ছাড়া সব বিষয়ের পরীক্ষাই হবে সৃজনশীল প্রশ্নপত্রে।
কোচিং সেন্টার বন্ধে শিক্ষার্থীদের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, পরীক্ষার আগে কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখা কোনো স্থায়ী সমাধান নয়। কিন্তু পরীক্ষার আগে প্রশ্নফাঁস, জালিয়াতি ও অনিয়মে কোচিং সেন্টারের কিছু অসাধু ব্যক্তির জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে। এ কারণে বাধ্য হয়ে পাবলিক পরীক্ষার আগে কোচিং বন্ধের নির্দেশ দেয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ক্লাসে শিক্ষকরা মনোযোগ সহকারে পড়ান না বলেই শিক্ষার্থীরা কোচিংয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছে। এ কারণে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনলাইনের আওতায় আনা হবে। এর মাধ্যমে শিক্ষকদের পাঠদান কার্যক্রম মনিটরিং করা হবে। এতে শিক্ষকদের জবাবদিহিতা বাড়বে এবং পাঠদানের প্রতি মনোযোগী হয়ে উঠবেন। এ লক্ষ্যে শিক্ষা নীতিমালায় বিষয়গুলো নতুনভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। দীর্ঘদিন আটকে থাকা শিক্ষা আইন বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে। শিক্ষার্থীদের পাঠদানে আনন্দপূর্ণ করে তুলতে কারিকুলামে আমূল পরিবর্তন আনা হচ্ছে। মূল্যায়ন পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা হচ্ছে, বিষয় ও পরীক্ষা কমানো হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সচিব মুনশী শাহাবুদ্দীন আহমেদ প্রমুখ।
There are no comments at the moment, do you want to add one?
Write a comment