কংগ্রেস এমপিকে জুতা নিক্ষেপ
সংবাদ বাংলা: কংগ্রেসের এমপি হওয়ার পর অভিষেক মনু শনিবার বিকেলে কলকাতার টালিগঞ্জের টলি ক্লাবের একটি অনুষ্ঠানে আসেন। খবর পেয়ে যুব কংগ্রেসের একদল নেতা-কর্মী ছুটে আসেন টলি ক্লাবের সামনে। তাঁরা অভিষেক মনুকে দেখে বিক্ষোভ শুরু করেন। তাঁর গাড়ির সামনে প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে ‘গো ব্যাক অভিষেক মনু’ স্লোগান দেন। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ যুব কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা পায়ের জুতা খুলে অভিষেক মনুর গাড়ির দিকে নিক্ষেপ করেন। পরে অবশ্য পুলিশের সহযোগিতায় অনুষ্ঠানে যোগ দেন অভিষেক মনু। এ ঘটনায় যুব কংগ্রেসের ২০ জন কর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গত মাসে পশ্চিমবঙ্গের কোটায় ভারতের আইনসভার উচ্চকক্ষ রাজ্যসভার সাংসদ হন দিল্লির প্রখ্যাত আইনজীবী ও কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিংভি। পশ্চিমবঙ্গের কংগ্রেস ও বাম দল যৌথভাবে এই শূন্য পদে প্রার্থী দিলে অনায়াসে সেই প্রার্থী জিততে পারতেন। কিন্তু কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব পশ্চিমবঙ্গের দিকে না তাকিয়ে দিল্লির অভিষেক মনুকে প্রার্থী করে।
মূলত পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে গোপন আঁতাত করে এই প্রার্থী (অভিষেক মনু) চূড়ান্ত করেছিল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। ফলে তৃণমূল ভোট দেয় অভিষেক মনুকে। আর জয়ীও হন তিনি। মমতা কেন অভিষেক মনুকে প্রার্থী করেছেন, তা এখন পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক অঙ্গনে স্পষ্ট হয়ে গেছে। অভিষেক মনু ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে ফাঁস হওয়া নারদ ঘুষ গ্রহণ কাণ্ডের মামলায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ নিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের পাশে দাঁড়ান। এতে খেপে যায় রাজ্য কংগ্রেস। আর সন্তুষ্ট থাকে তৃণমূল কংগ্রেস। বিরোধীরা বলছেন, অভিষেক মনুকে রাজ্যসভার সাংসদ করে মমতা কংগ্রেসকে পুরস্কার দিলেন।
পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেস বলছে, রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিল নিয়ে তৃণমূলের হাতে তারা মার খাচ্ছে, রক্ত ঝরছে, বাধা পাচ্ছে। এমন প্রেক্ষাপটে পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে শুক্রবার দিল্লিতে বিজেপির দায়ের করা মামলায় রাজ্য সরকারে পক্ষ নিয়ে অভিষেক মনু কীভাবে শুনানি করেন? পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ করার দাবিতে কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা করেছেন। সোমবার সেই মামলার চূড়ান্ত শুনানি হওয়ার কথা।
অভিষেক মনু কলকাতায় সাংসদ হিসেবে প্রথম পা দেওয়ায় তাঁকে নিয়ে বিধায়কদের একটি বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। সেই বৈঠক বাতিল করে দিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাজ্য সভাপতি সাংসদ অধীর চৌধুরী ও পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধীদলীয় নেতা কংগ্রেস বিধায়ক আবদুল মান্নান। এ ছাড়া অভিষেক মনুর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে। অভিষেক মনুকে কালো পতাকা দেখানো ও জুতা ছোড়ার ঘটনা সম্পর্কে অধীর চৌধুরী বলেছেন, ‘এটা কংগ্রেস কর্মীদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ।’
There are no comments at the moment, do you want to add one?
Write a comment