করোনায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু ও শনাক্ত
সংবাদ বাংলা: করোনায় টানা ছয় দিনের মতো একশ’র বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আরও ১৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আগের দিন বৃহস্পতিবার করোনায় একদিনে রেকর্ডসংখ্যক ১৪৩ জনের প্রাণহানীর ঘটনা ঘটে। করোনা দ্বিতীয় ঢেউয়ে গত রোববার প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে ১১৯ জন মারা গিয়েছিল, সেটাই ছিল এক দিনে মৃত্যুর সর্বোচ্চ সংখ্যা। আগের দিন বুধবার ১১৫ জনের মৃত্যু হয়। মঙ্গলবার ১১২, সোমবার ১০৪ জন মারা গেছেন প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে। গতকাল করোনায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৮ হাজার ৪৮৩ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। বুধবার ৮ হাজার ৮২২ জন রোগী শনাক্ত হয়, যা এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে এখন পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৯৪ শতাংশ। আর গতকাল একদিনে শনাক্তের হার ছিল ২৮ দশমিক ২৭ শতাংশ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী, টানা দুই সপ্তাহের বেশি সময় পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরা যায়। সেখানে গত সাতদিন ধরে করোনার শনাক্ত আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে।
২৪ ঘণ্টায় খুলনা বিভাগে সবচেয়ে বেশি ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঢাকায় ৩০ জন, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিভাগে ২৪ জন, রংপুরে ৯ জন, ময়মনসিংহে ৬ জন এবং বরিশাল ও সিলেট ২ জনের মৃত্যু হয়েছে ২৪ ঘণ্টায়।
নতুন শনাক্ত রোগীদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ৩ হাজার ৮৪১ জন, , রাজশাহী বিভাগে ৩ হাজার ৪৮৬ জন, রংপুরে ২ হাজার ৫৫ জন, খুলনা বিভাগে ১ হাজার ২০১ জন, চট্টগ্রামে ১ হাজার ৫৫ জন, সিলেট বিভাগে ৩০২ জন, ময়মনসিংহে ২৭০ জন, বরিশাল বিভাগে ২৪৮ জন।
নতুনদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত করোনা সংক্রমিত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে মোট ৯ লাখ ৩০ হাজার ৪২ জন। মোট মৃত্যু হয়েছে ১৪ হাজার ৭৭৮ জনের। সুস্থ হয়েছেন ৮ লাখ ২৫ হাজার ৪২২ জন। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৪ হাজার ৫০৯ জন।
করোনার ঊর্ধ্বমুখি প্রবণতার মধ্যে পরিস্থিতি সামাল দিতে সারা দেশে ৭ দিনের কঠোর লকডাউন চলছে। সীমান্ত জেলাগুলোতে ভারতীয় (ডেল্টা) ভ্যারিয়েন্টের প্রকোপে মে মাসের শেষে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে থাকে। এই পরিস্থিতিতে সংক্রমণ ও মৃত্যুর ঊর্ধ্বগতিতে ভয়াবহ এক জুন পার করে বাংলাদেশ। জুন মাসটি যেন দেশবাসীর জন্য এক মহাআতঙ্কের মাস ছিল। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সারাদেশে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়েছে। শুরুতে সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে এই ভ্যারিয়েন্টের প্রকোপে সংক্রমণ ও মৃত্যু হার বেশি ছিল। দেশের মধ্যঅঞ্চল অর্থাৎ ঢাকাসহ আশেপাশের জেলায় ছড়িয়ে পড়ে। ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়ছে। তারা বলছেন, স্বাস্থ্যবিধি মানতে অনীহা। ঢিলেঢালা লকডাউনে সংক্রমণ ও মৃত্যু কমাতে পারেনি। সংক্রমণের এই ধারা অব্যাহত থাকলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ঠিক রাখা সম্ভব হবে না।
There are no comments at the moment, do you want to add one?
Write a comment