কারাগারে সালমান খানের দিনগুলো
সংবাদ বাংলা: বলিউডের ‘ভাইজান’ কি শনিবার জামিন পাবেন? শনিবার দুপুরেই বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, দুপুর ২টোর পর সলমনের জামিন সংক্রান্ত মামলার রায় দেবেন বিচারক রবীন্দ্রকুমার জোশী। এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ জোধপুর সেশনস কোর্টে শেষ হয়েছে সলমন খানের জামিনের শুনানি। তার পরই বিচারক জোশী জানান, দুপুরে এ বিষয়ে রায় শোনাবেন তিনি।
এদিকে এতদিন জেলে যাওয়ার অভিনয় করে এলেও সত্যিকারের জেল জীবন যে কতটা কঠিন, তা হাড়েহাড়ে টের পাচ্ছেন বলিউড তারকা সালমান খান। ভারতের এই সময়ের ‘সুপারহিট হিরো’ কৃষ্ণসার হরিণ শিকারের দায়ে পাঁচ বছরের দণ্ড নিয়ে তিন দিন ধরে রাজস্থানের যোধপুর কারাগারে রয়েছেন। বাইরে তিনি যত বড় তারকাই হন না কেন, কারাগারে তার পরিচয় এখন একটিই- কয়েদী নম্বর ১০৬।
আদালতের রায়ে বন্দি হওয়ার পর কারাগারের খাবার না খেলেও ৫২ বছরেও হিট সিনেমা উপহার দিয়ে যাওয়া এই অভিনেতা শরীরচর্চায় ক্ষান্ত দেননি বলে কারা কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে। রাজস্থানের আদালত বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণার পর কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয় সালমান খানকে। সেদিন সন্ধ্যার পরই তিনি ঘণ্টা খানেক শরীর চর্চা করেন বলে কারাধ্যক্ষ বিক্রম সিং জানিয়েছেন। রাতে জেলের খাবার খাননি তিনি। ঘুমাচ্ছেন মেঝেতে কম্বল বিছিয়ে।
বিক্রম সিং টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেন, চিকিৎসক ডাকব কি না, তা তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, তিনি বলেছেন যে প্রয়োজন নেই। “মাঝরাতে তিনি ঘুমিয়ে পড়েন। সকাল সাড়ে ৬টার দিকে জেলখানার সাইরেন বেজে উঠলে তার ঘুম ভাঙে। তবে এরপর আবার ঘুমিয়ে পড়েন তিনি, ওঠেন সকাল সাড়ে ৮টার দিকে।”
শুক্রবার সকালে উঠে বন্দিদের নাশতা করেননি সালমান। তিনি কারারক্ষীর কাছে জানতে চান, ক্যান্টিন থেকে তার জন্য খাবার আনা যাবে কি না? “এরপর তিনি দুধ ও রুটি আনতে বললে তা আনা হয় তার জন্য,” বলেন বিক্রম সিং। দুধ-রুটি খেয়ে শারীরিক কসরতে মন দেন এই অভিনেতা, সেলের ভেতরে হাঁটাহাঁটিও করেন তিনি।
“সকাল সাড়ে ১১টার দিকে তাকে জানানো হয়, তার জামিনের আবেদনে শনিবার আদেশ হবে। তা শোনার পর দুপুরে খাননি তিনি,” বলেন বিক্রম সিং।
এরপর বিকালে বোন আলভিরা ও অর্পিতা এবং অভিনেত্রী প্রীতি জিন্তা দেখা করেন সালমানের সঙ্গে। দুপুর থেকে অভুক্ত থাকার পর বিকাল থেকে সন্ধ্যা তিন ঘণ্টা ফের শরীর চর্চা শুরু করে কারারক্ষীদের তাক লাগিয়ে দেন তিনি। বিক্রম সিং বলেন, “তিনি সত্যিই টাফ ম্যান।” এরপর সালমান জানান, তিনি গোসল করতে চান; তার ব্যবস্থা করে দেয় কারারক্ষীরা। এক কারা কর্মকর্তা জানান, এরপর তাকে রাতের খাবার দেওয়া হয়। অন্য বন্দিরা যে পানি পান করেন, কারাগারে সালমান খানও একই পানি পান করছেন। কারাগারে অন্য বন্দি আসারাম বাপুর সঙ্গে সালমানের কথা বলার যে কথা রটেছে, তা নাকচ করেন কারাধ্যক্ষ বিক্রম সিং বলেন, সালমান খানের ওয়ার্ডে তিনি একাই রয়েছেন।
আজ শনিবার সকাল থেকে সালমানের জামিন সংক্রান্ত মামলা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল। কারণ, শুক্রবার বিচারক রবীন্দ্রকুমার জোশী-সহ ৭২ জনকে বদলির নির্দেশ দেয় প্রশাসন। তবে, বিচারক বদলির এই প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ করতে সাত দিন সময় লাগে। সে জন্য এ দিন জোশীর এজলাসেই হয় সলমনের জামিন সংক্রান্ত মামলার শুনানি। ২০ বছর আগেকার কৃষ্ণসার হরিণ হত্যা মামলায় পাঁচ বছরের কারাবাসের সাজা পাওয়ার পর থেকেই সলমনকে রাখা হয়েছে জোধপুর সেন্ট্রাল জেলে। শুক্রবার রাতে তাঁকে ডাল, রুটি, তরকারি খেতে দেওয়া হয়। জেল সূত্রে খবর, বিচারক বদলির খবর পেয়ে তিনি নাকি অস্থির হয়ে পড়েছিলেন। রাতে দু’চোখের পাতা এক করতে পারেননি। জোধপুর সেশনস কোর্টে জামিনের আবেদন জানিয়ে, সালমানের তরফ থেকে বলা হয়েছে, যে সাক্ষীদের কথার উপর ভিত্তি করে এই মামলার সাজা ঘোষণা করা হয়েছে, তাঁদের মন্তব্য মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। শুক্রবার বেশ কিছুক্ষণ শুনানির পর রায়দান স্থগিত রেখেছিলেন বিচারপতি রবীন্দ্রকুমার জোশী।
There are no comments at the moment, do you want to add one?
Write a comment