গণহত্যা একাত্তর: ১ মিনিট আলো নিভিয়ে স্মরণ
সংবাদ বাংলা: আজ ভয়াল ২৫ মার্চ, জাতীয় গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কাপুরুষের মতো অপারেশন সার্চলাইট নামে ঢাকাসহ সারা দেশে নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। মেতে ওঠে ইতিহাসের নৃশংসতম গণহত্যায়, যা কালরাত হিসেবে পরিচিত।
এই গণহত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ সবই ১৯৪৮ সালের ১১ ডিসেম্বর জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত ‘জেনোসাইড কনভেনশন’ শীর্ষক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তে বর্ণিত সংজ্ঞায় গণহত্যার চূড়ান্ত উদাহরণ।
এই গণহত্যার স্বীকৃতি খোদ পাকিস্তান সরকার প্রকাশিত দলিলেও রয়েছে। পূর্ব পাকিস্তানের সংকট সম্পর্কে যে শ্বেতপত্র পাকিস্তানি সরকার মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে প্রকাশ করেছিল, তাতে বলা হয়, ‘১৯৭১ সালের পয়লা মার্চ থেকে ২৫ মার্চ রাত পর্যন্ত এক লাখেরও বেশি মানুষের জীবননাশ হয়েছিল।’
আজ রাত ৯টা থেকে ৯টা ১ মিনিট (কেপিআই ও জরুরি স্থাপনা ছাড়া) প্রতীকী ব্ল্যাক-আউট বা আলো নিভিয়ে কালরাত স্মরণ করবে জাতি। দেশের মানুষ এই দিনটি ব্যথাতুর হৃদয়ে পালন করে থাকে। গত বছর ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস হিসেবে পালনের প্রস্তাব জাতীয় সংসদে সর্বসম্মতভাবে পাস হয়। দিবস উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বার্তা সংস্থা বাসস অস্ট্রেলিয়ার সিডনি মর্নিং হেরাল্ড পত্রিকার ভাষ্য দিয়ে জানায়, শুধু ২৫ মার্চ রাতেই বাংলাদেশে প্রায় এক লাখ মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল, যা গণহত্যার ইতিহাসে এক জঘন্যতম ভয়াবহ ঘটনা। পরবর্তী নয় মাসে একটি জাতিকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার লক্ষ্যে ৩০ লাখ নিরপরাধ নারী-পুরুষ-শিশুকে হত্যার মধ্য দিয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা পূর্ণতা দিয়েছিল সেই বর্বরতার ইতিহাসকে।
২৫ মার্চ দুপুরের পর থেকেই ঢাকাসহ সারা দেশে থমথমে অবস্থা বিরাজ করতে থাকে। এদিন সকাল থেকেই সেনা কর্মকর্তাদের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। রাতে সেনা অভিযানের শুরুতেই হানাদার বাহিনী বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তাঁর ধানমন্ডির বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার করে। এদিন মধ্যরাতে ট্যাংক নিয়ে ঢাকার পিলখানা, রাজারবাগ, নীলক্ষেত আক্রমণ করে পাকিস্তানি সেনারা। পাকিস্তানি হায়েনাদের কাছ থেকে রক্ষা পায়নি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের ছাত্রীরাও। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের নয়জন শিক্ষককে সেদিন নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়। জগন্নাথ হলে চলে নৃশংসতম হত্যাকাণ্ড।
There are no comments at the moment, do you want to add one?
Write a comment