Sangbad Bangla 24

News

 শিরোনাম
  • সোনার দামে নতুন রেকর্ড, ভরি ১৩৫৬৬৪ টাকা সংবাদ বাংলা: সোনার দামে নতুন রেকর্ড করেছে। ভরি ১ লাখ ৩৫ হাজার ৬৬৪ টাকা। সর্বোচ্চ দামের নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করল। আগামীকাল বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে বলে...
  • পদ্মায় মুন্সিগঞ্জ বিক্রমপুর পরিব্রাজক ফোরামের নৌভ্রমণ চাষী সিরাজুল ইসলাম: পদ্মায় মুন্সিগঞ্জ বিক্রমপুর পরিব্রাজক ফোরামের নৌভ্রমণ নিয়ে কিছু কথা। গত ১৮ মার্চ ময়ূরপঙ্খি নাওয়ে পদ্মা ভ্রমণের সুখস্মৃতি। সকাল পৌনে সাতটায় ধানমন্ডি থেকে বাসে চেপে বসলাম। গুলিস্তানে এসে...
  • জবি অ্যাকাউন্টিং অ্যালামনাই কমিটির চতুর্থ সভা অনুষ্ঠিত সংবাদ বাংলা: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) অ্যাকাউন্টিং অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের কার্যনির্বাহী কমিটির চতুর্থ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় জবির অ্যাকাউন্টিং বিভাগের সেমিনার কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের সভাপতি কামরুল হাসান রিপনের...
  • মীরপুরে এক বেলা আহারের শীতবস্ত্র বিতরণ সংবাদ বাংলা: শীত বস্ত্র বিতরণ করেছে ‘এক বেলা আহার’ সংগঠন। শনিবার  মীরপুরে শরীফ শিক্ষা পরিবার স্কুলের ১৬০ জন শিক্ষার্থীর মাঝে  শীতবস্ত্র, কলম ও খাতা বিতরণ করা হয়। এসময় এলাকার বিশিষ্টজন...
  • এক বেলা আহারের শীত বস্ত্র বিতরণ সংবাদ বাংলা: প্রতিবন্ধী ২১৪ পরিবারের মাঝে শীত বস্ত্র বিতরণ করেছে সেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘এক বেলা আহার’। শনিবার সাভারের গান্দারিয়া গ্রামে এই শীত বস্ত্র বিতরণ করা হয়। এই গ্রামে ২১৪টি প্রতিবন্ধী পরিবার...

পশ্চিমবঙ্গের আসানসোলে সন্তান হারানো ইমাম ঠেকিয়ে দিল দাঙ্গা

পশ্চিমবঙ্গের আসানসোলে সন্তান হারানো ইমাম ঠেকিয়ে দিল দাঙ্গা
মার্চ ৩১
২২:৩৩ ২০১৮

সংবাদ বাংলা: আসানসোলের যে অঞ্চলে মঙ্গলবার থেকে দাঙ্গা শুরু হয়েছিল সেই চাঁদমারি আর কুরেশী মহল্লা পেরিয়ে অনেকটা ভেতরে নূরানী মসজিদ। বৃহস্পতিবার খবর এলো, মসজিদের ইমাম মুহাম্মদ ইমদাদুল্লাহর নিখোঁজ ছেলের লাশ পড়ে আছে স্থানীয় হাসপাতালে। তাঁকে বলা হলো হাসপাতালে গিয়ে লাশ সনাক্ত করতে। আসানসোলের পরিস্থিতি তখনো দুদিনের হিন্দু-মুসলিম সংঘাতের জের ধরে থমথমে। সবকিছু বন্ধ। চারিদিকে ভেসে বেড়াচ্ছে নানা গুজব। (বিবিসি বাংলা)
ইমাম মুহাম্মদ ইমদাদুল্লাহ হাসপাতালে গেলেন। সনাক্ত করলেন নিজের ছেলের ক্ষত-বিক্ষত লাশ। নখ উপড়ে নেয়া হয়েছে। ঘাড়ে ধারালো অস্ত্রের কোপ। লাশটি আধপোড়া, মনে হচ্ছে কেউ পুড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। আগের দুদিন ধরে নিখোঁজ ছেলেকে খুঁজেছেন ইমদাদুল্লাহ। সেই সঙ্গে মহল্লার সব মানুষ। কোথাও পাওয়া যায়নি তাকে। ক্ষত-বিক্ষত লাশটি যখন মহল্লায় আনা হলো, পরিস্থিতি হয়ে উঠলো আরও অগ্নিগর্ভ। “ইমাম সাহেবের ছেলের মৃত্যুর ঘটনাটা শুনে প্রথমে সবারই মাথায় রক্ত চড়ে গিয়েছিল” বলছিলেন মহল্লার বাসিন্দা মুহম্মদ ফারহাদ মালিক। “এটা তো রক্ত গরম করে দেওয়ার মতোই ঘটনা।”
ইমাম মুহাম্মদ ইমদাদুল্লাহ বুঝতে পারলেন, এই প্রতিহিংসার রাশ টানতে হবে এখনই। নইলে আরও রক্ত ঝরবে। সাম্প্রদায়িক সহিংসতা চলে যাবে নিয়ন্ত্রণের বাইরে। প্রাণ যাবে আরও মানুষের। একটা মাইক হাতে বেরিয়ে পড়লেন তিনি। মহল্লায় মহল্লায় ঘুরে সবার প্রতি আবেদন জানালেন, আপনারা শান্ত হোন। পুত্র হারানোর কথা বলতে গিয়ে গলা ধরে গেল ইমামের। তবে তার মধ্যেও বলছিলেন, “এই অবস্থাতেও আমি সবার কাছে আবেদন করতে রাস্তায় বেরিয়েছিলাম – সবাইকে বুঝিয়েছি যে আমার যে ক্ষতি হয়েছে, সেটা যেন আর কোনও বাপ-মায়ের না হয় – কেউ যেন দাঙ্গা না বাধায় ছেলের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে।”
পুত্রশোকের মধ্যেও এলাকায় ঘুরে ছেলের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে অশান্তি না ছড়ানোর জন্য তার এই আবেদনে কাজ হলো। লোকজন ঘরে ফিরে গেল। আসানসোলের চাঁদমারি আর কুরেশী মহল্লা মূলত মুসলমান প্রধান এলাকা। শুক্রবার জুম্মার নামাজ শেষে এলাকার মানুষ ইতিউতি জটলা করেছিলেন, ভীড় ছিল মসজিদের সামনেও। ওখানেই একটা ঘরে আমার জন্য অপেক্ষা করছিলেন মুহম্মদ ইমদাদুল্লাহ- মসজিদটির ইমাম।
তার ১৬ বছরের ছেলে মোহাম্মদ শীবগাতউল্লাহ দাঙ্গা শুরুর পর দুদিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন। বৃহস্পতিবার প্রথম তার লাশের সন্ধান পান তারা। ইমদাদুল্লাহ বলছিলেন, “ছেলেটা মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল, একই সঙ্গে নানা জায়গায় কোরান পড়তেও যেত। বুধবার যখন অশান্তি শুরু হয়, তখন নেহাতই কৌতূহলবশে দেখতে গিয়েছিল। আমার বড় ছেলে খবর দেয় যে একদল লোক ওকে টেনে নিয়ে যায়। পরের দিন জানলাম একটা মৃতদেহ পাওয়া গেছে – ওটাই আমার ছেলের দেহ।” “খুব যন্ত্রণা দিয়ে মেরে তো ফেলেইছে ছেলেটাকে, তারপরে দেহটা জ্বালিয়েও দিয়েছিল। এটা কেন করল ওরা!” এই নিদারুণ পুত্রশোক ভুলে ইমদাদুল্লাহ যে বলিষ্ঠ অবস্থান নেন, সেটি যেন আসানসোলকে আরও বড় বিপর্যয় থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছে।
এই ভয়ংকর ঘটনার পরও তার এলাকায় আরও দাঙ্গা অথবা কোনওরকম সাম্প্রদায়িক অশান্তি রোধ করা গেছে। ওই পাড়ায় হিন্দু আর মুসলমান পরিবারগুলো বহু বছর ধরেই যেমন একসঙ্গেই বাস করছেন, তেমনই সেখানকার মন্দির বা মসজিদ – সবই অক্ষত রয়েছে। ওই মহুয়াডাঙ্গাল এলাকারই বাসিন্দা প্রমোদ বিশ্বকর্মা বলছিলেন, “ইমাম সাহেবকে যে কী বলে ধন্যবাদ দেব! ছেলে হারানোর পরেও রাস্তায় মাইক নিয়ে বলে বেরিয়েছেন যে সবাই যেন শান্তি বজায় রাখে। তবে আমাদের এই পাড়াতে আমরা হিন্দু আর মুসলমান সবাই একসঙ্গেই থাকি বহু যুগ ধরে। পাড়ায় একটা মন্দির আছে প্রায় দেড়শা বছরের পুরনো, আবার মসজিদও আছে। বাইরে যা হয় হোক, আমাদের পাড়ায় কেউ ঝামেলা করতে পারে না।” জুলফিকার আলি দেখাচ্ছিলেন বহু যুগ ধরে মহুয়াডাঙ্গা এলাকায় কীভাবে হিন্দু আর মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষ পাশাপাশিই বাস করছেন। আরেক বাসিন্দু কুন্দন যাদব দুধ বিক্রি করেন। তিনি বলছিলেন, “খালাসী মহল্লা, মুসদ্দি মহল্লা – সব জায়গাতেই দুধ দিতে গেছি। মঙ্গলবার দাঙ্গা বাধার পরেও তার ব্যতিক্রম হয় নি। প্রথমে একটু ভয় পেয়েছিল অনেকেই, বিশেষ করে কমবয়সী ছেলেরা। কিন্তু তারপরে তারাও নিশ্চিন্ত হয়েছে যে অন্য যেখানে যাই হোক না কেন.. আমাদের পাড়ায় কোনও গন্ডগোল হবে না। তাই এলাকা ছেড়ে কেউ যায়ও নি।”
মুহম্মদ ফারহাদ মালিক বলছিলেন, ইমাম সাহেব যা বললেন, তারপরে সবাই বুঝেছে যে বাইরে থেকে এসে কেউ কেউ রাজনৈতিক ফায়দা তোলার জন্য অশান্তি ছড়াচ্ছে, উস্কানি দিচ্ছে। আমরা কেন তার মধ্যে জড়াব?” মহুয়াডাঙ্গাল ছেড়ে যখন বেরিয়ে আসছিলাম – দুটো মন্দির আর একটা বড় মসজিদ পেরিয়ে, তখন দেখা হয়েছিল এলাকার বাসিন্দা খোশনূর আদাব , সিদ্ধার্থ বিশ্বকর্মা, পি এন শর্মা আর মুহম্মদ শামসুল আলমের মতো কয়েকজনের সঙ্গে। তাঁদের চোখে মুখে যে উদ্বেগ ছিল না, সেটা বলা যাবে না। তবে সবাই একটাই সুরে বলছিলেন রাজনীতি করার জন্য বাইরে থেকে লোক এসে দাঙ্গা বাধাবে কেউ, এ মেনে নেওয়া যায় না। শিল্পশহর আসানসোলের যে পরিচয় ছিল সৌভ্রাতৃত্বের শহর বলে, সেই পরিচয়টাই ফিরে পেতে চান এরা সবাই – খুব দ্রুত।

০ Comments

No Comments Yet!

There are no comments at the moment, do you want to add one?

Write a comment

Write a Comment

Leave a Reply

ফটো গ্যালারি

This slideshow requires JavaScript.

কারবার স্মৃতিতে অনন্য হোসনি দালান

ঢাকাইয়া বনেদি খাবার