পৃথিবীর প্রথম পুরুষাঙ্গ ও অণ্ডকোষ প্রতিস্থাপন
সংবাদ বাংলা: আফগানিস্তানে বোমা বিস্ফোরণে আহত এক মার্কিন সৈন্যের দেহে পুরুষাঙ্গ ও অণ্ডকোষ প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। মেরিল্যান্ড রাজ্যের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শল্যচিকিৎসক এই অপারেশনটি করেন। আফগানিস্তানে বোমা হামলায় ওই সেনার লিঙ্গ ও অণ্ডকোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। পরে মৃত এক ব্যক্তির দেহ থেকে লিঙ্গ, অণ্ডকোষ ও উদর প্রাচীরের একাংশ নিয়ে তা আহত সেনার দেহে প্রতিস্থাপন করা হয়। গত ২৬ মার্চ ১১ জন শৈল্য চিকিৎসক ১৪ ঘণ্টা অস্ত্রোপচারের মধ্য দিয়ে প্রতিস্থাপনের কাজ সম্পন্ন করেন। চিকিৎসকরা বলছেন, নতুন লিঙ্গ দিয়ে সব কাজই হবে। এমনকি ওই সেনা যৌন ক্ষমতাও ফিরে পাবে। সাধারণভাবে লিঙ্গ পুনর্গঠন করলে যা হওয়া সম্ভব ছিল না। দায়িত্ব পালনের সময় আহত কোনো সেনার ওপর এটিই প্রথম এ ধরনের অস্ত্রোপচার। তাছাড়া, অণ্ডকোষ ও পেটের সংশ্লিষ্ট অংশের টিস্যুসহ পূর্ণাঙ্গ লিঙ্গ প্রতিস্থাপনও এটিই প্রথম বলে জানিয়েছে বিবিসি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, নৈতিক বিবেচনায় তারা মৃত দাতার শুক্রাশয় প্রতিস্থাপন করেননি।
জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘প্লাস্টিক অ্যান্ড রিকনস্ট্রাকটিভ সার্জারির’ প্রধান ড. ডব্লিউ পি অ্যান্ড্রু লি জানান, ২০১৪ সালে হওয়া ‘ইন্টিমেসি আফটার ইনজুরি’ সিম্পোজিয়ামে তারা যুদ্ধাহত সেনাদের পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে এ ধরনের জখমের পরের দুর্বিষহ জীবনযাপনের কথা জানতে পারেন। এরপরই তারা জেনিটাল ট্রান্সপ্ল্যান্ট প্রোগ্রামের কথা চিন্তা করেন। এ প্রোগ্রামের আওতায় বিশ্ববিদ্যালয় এ ধরনের ৬০টি অস্ত্রোপচার করার অনুমোদন দিয়েছে বলেও জানান চিকিৎসকরা। আফগানিস্তানে লুকানো বোমার আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত সেনার অস্ত্রোপচারের পর ছয় থেকে ১২ সপ্তাহের মধ্যে তিনি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবেন বলে প্রত্যাশা বিশেষজ্ঞদের। (অস্ত্রোপচারের পর) যখন আমি প্রথম জেগে উঠি, নিজেকে আরও স্বাভাবিক মনে হচ্ছিল, মনে হচ্ছিল শেষ পর্যন্ত আমি ঠিক হয়ে গেছি,” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই সেনা এমনটিই বলেছেন বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়।
জীবন পাল্টে দেওয়া এ অঙ্গ প্রতিস্থাপন তাকে আবারো স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে দেবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন চিকিৎসক দলের সদস্য ড. রেডিট।জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান ড. এ্যান্ড্রু লী সোমবার এক সংবাদ ব্রিফিংএ বলেন, যুদ্ধে অনেক সময় লোকে এমন গুরুতর ভাবে আহত হন, যা তারা গোপন রাখেন, এবং তাদের জীবনে এর যে প্রভাব পড়ে তা অনেকেই উপলব্ধি করতে পারেন না। তিনি আরো বলেন, যৌনাঙ্গের ক্ষতি হওয়াটা হচ্ছে যুদ্ধে আহত হবার এমন একটি দিক যা নিয়ে কথা বলা হয় না – অথচ তা মানুষের আত্মপরিচয়, মর্যাদাবোধ এবং সম্পর্কের ক্ষেত্রে গুরুতর প্রভাব ফেলে।
পৃথিবীর প্রথম পুরুষাঙ্গ প্রতিস্থাপন অপারেশন হয়েছিল ২০১৪ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায়।
There are no comments at the moment, do you want to add one?
Write a comment