বিএনপি মুখ বন্ধ করলেই রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান: হানিফ
সংবাদ বাংলা: রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে ব্যর্থতার জন্য বিএনপি দায়ী করছে সরকারকে, তার পাল্টায় দলটিকেই মুখ বন্ধ রাখার আহ্বান জানালেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ। বাংলাদেশের ‘সব কিছু’ সমাধানের সক্ষমতা শেখ হাসিনার সরকারের রয়েছে দাবি করে তিনি বলেছেন, একটি অনুরোধ করব মির্জা ফখরুল (বিএনপি মহাসচিব) সাহেবকে, আপনাদের উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড এবং কথাবার্তা বন্ধ করুন। তাহলে দেখবেন সকল সমস্যার সমাধান দ্রুত হবে। দয়া করে আপনারা উস্কানিটা বন্ধ রাখুন।
রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে বিএনপির ১০ দফা সুপারিশ উত্থাপনের পরদিন বৃহস্পতিবার ঢাকায় গণগ্রন্থাগার মিলনায়তনে জাতীয় শোক দিবসের এক আলোচনা অনুষ্ঠানে একথা বলেন হানিফ। দুই বছর আগে নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া সাদে ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর দ্বিতীয় দফা উদ্যোগ গত সপ্তাহে ভেস্তে যায়। মিয়ানমারে নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কিত রোহিঙ্গাদের কেউ ফিরে যেতে চায়নি।
শরণার্থী প্রত্যাবাসন শুরু না হওয়ার জন্য মিয়ানমার সরকারকে দায়ী করার পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, কয়েকটি এনজিও রোহিঙ্গাদের ফিরে না যেতে নিরুৎসাহিত করছে। এর মধ্যেই বুধবার কূটনীতিকদের সামনে ১০ দফা সুপারিশ উত্থাপন করে বিএনপি বলেছে, সরকারের ব্যর্থতার কারণে রোহিঙ্গা সঙ্কট এখন বাংলাদেশের জন্য ‘বিপজ্জনক’ হয়ে উঠেছে।
তার প্রতিক্রিয়ায় হানিফ বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কট ব্যবহার করে বাংলাদেশকে ‘ব্যর্থ রাষ্ট্রে’ পরিণত করার চেষ্টায় আছে বিএনপি। এই বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য বিএনপি-জামায়াতের একটি চক্র এখনও তৎপর। এ দেশ যখন উন্নয়নের ধারায় এগিয়ে যায় তখন পদে পদে বাধাগ্রস্ত করে তারা।
এই সঙ্কট সমাধানে ‘জাতীয় ঐক্য’ গড়তে বিএনপির আহ্বান জবাবে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যু জাতীয় সমস্যা এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু আপনারা জাতির মধ্যে যে বিভেদ সৃষ্টি করেছেন, আপনাদের মুখের জাতি ঐক্যের কথা জনগণ শুনতে চায় না। আমরা বলতে চাই, জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। স্বাধীনতাবিরোধী পাকিস্তানি শক্তির সঙ্গে ঐক্যের কোনো প্রয়োজন নেই। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের জন্য জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার দাবি করে হানিফ বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের মূল চক্রান্তকারী বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান, যিনি বাঙালি জাতিকে বিভক্ত করেছেন। সেই জিয়াউর রহমানের বিচার না হওয়া পর্যন্ত, তার মুখোশ উন্মোচিত না হওয়া পর্যন্ত জাতির বিভক্তি দূর হবে বলে আমার বিশ্বাস করি না।
বিএনপিবিহীন দশম সংসদে কোরাম সঙ্কটে ১৬৪ কোটি টাকা অপচয়ের হিসাব দেওয়া টিআইবির সমালোচনাও করেন হানিফ। তিনি বলেন, সেখানে (টিআইবির প্রতিবেদন) বলা হয়েছে, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন জনগণের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ। আপনারা বলছেন, ২৬ মিনিটে বিল পাস হয়েছে। সমস্যাটা কোথায়? দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে যদি কোনো বিল উত্থাপন হয়, সেটা সকলের সম্মিলিতভাবে দীর্ঘ আলোচনার বিষয় যদি না থাকে, সকলে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতেই পারে। তাহলে কিসের সমস্যা? আপনি বলতে পারেন, এই বিল পাস হওয়ার কারণে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হয়েছে কি? অন্য কোনো সমস্যার সৃষ্টি করেছে কি? বিল কীভাবে পাস হল, কত সময়ে পাস হল, সেটার সঙ্গে সংসদের (ব্যর্থ হওয়ার) যৌক্তিকতা নেই।
আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ উপকমিটি আয়োজিত এই আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন উপ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক খন্দকার বজলুল হক। আলোচনা করেন কবি নির্মলেন্দু গুণ, বিচারপতি এ এইচ এম সামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন।
There are no comments at the moment, do you want to add one?
Write a comment