ভারতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বৃদ্ধি ১৬%
সংবাদ বাংলা: এক বছরে বেড়েছে ১৬ শতাংশ। না এই বৃদ্ধি দেশের আর্থিক উন্নয়নের পরিসংখ্যান নয়। এটি হচ্ছে ২০১৭ সালে দেশে সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনাবৃদ্ধির শতকরা হিসেব। আর সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনাবৃদ্ধির সঙ্গেই বৃদ্ধি পেয়েছে এই ধরনের হিংসায় মৃতের সংখ্যা এবং সম্পত্তির লোকসান।
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক প্রতিবেদনে বলেছে, ২০১৭ সালে দেশে ৮২২টি সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনা ঘটেছে। ওই সমস্ত হিংসার ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ১১১ জন। আহতের সংখ্যা ২৩৮৪। পক্ষান্তরে, ২০১৬ সালে সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনা ঘটেছিল মোট ৭০৩টি। মৃত্যু হয়েছিল ৮৬ জনের। দেশে সবচেয়ে বেশি সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনা ঘটেছে উত্তরপ্রদেশে। গত এক বছরে ওই রাজ্যে সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনা ঘটেছে মোট ১৯৫টি। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কর্ণাটক এবং মহারাষ্ট্র। ওই দুই রাজ্যেই সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনা ঘটেছে ১০৫টি করে। তারপরের তিনটি স্থানে রয়েছে মধ্যপ্রদেশ, বিহার ও রাজস্থান। আর সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনা একদমই ঘটেনি পাঞ্জাব, মণিপুর এবং ওডিশাতে। আর গত তিন বছরের হিসেবে রেকর্ড তৈরি করেছে উত্তর–পূর্বের রাজ্যগুলি। অরুণাচল, মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড এবং সিকিমে গত তিন বছরে একটিও সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনা ঘটেনি। এই তালিকায় অপর রাজ্য হচ্ছে গোয়া।
তবে শুধু সম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনাতেই নয়। যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যে উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের সংখ্যাও। উত্তরপ্রদেশে গত এক বছরে মহিলাদের শ্লীলতাহানির ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে ৩৩ শতাংশ। আর ওই একই সময়ে ওই রাজ্যে ধর্ষণের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে ২৬ শতাংশ। এছাড়াও অপহরণের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে ৩৫ শতাংশ। আর যৌতুকের কারণে বধূমৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ৭ শতাংশ।
শুধু নারী–সুরক্ষার ক্ষেত্রেই নয়। কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেও ব্যর্থ হয়েছে প্রশাসন। কাশ্মীরে গত এক বছরে নিরপরাধ নাগরিকদের মৃত্যুর সংখ্যা ৪০। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দাবি, গত এক বছরে ৪২ শতাংশ বেশি সন্ত্রাসবাদীকে খতম করেছেন নিরাপত্তারক্ষীরা। ওই মন্ত্রকের হিসেব অনুযায়ী ১৯৯০ সাল থেকে অশান্ত কাশ্মীরে এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১৩,৯৭৬ জন নাগরিকের। ৫,১২৩ জন নিরাপত্তারক্ষীর মৃত্যু হয়েছে বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে। এই হিসেব ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। পাশাপাশি কাশ্মীরে অনুপ্রবেশের ঘটনাও বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৭ সালে মোট ৪০৬টি অনুপ্রবেশের প্রয়াস চালানো হয়েছিল সীমান্তের অপর প্রান্ত থেকে। তবে কাশ্মীরে সাফল্য না পেলেও নকশাল অধ্যুষিত জেলাতে হিংসার ঘটনা অনেকই কমেছে বলে দাবি সরকারের। ২০১৬ সালে যেখানে ১০৪৮টি হিংসার ঘটনা ঘটেছিল নকশাল অধ্যুষিত এলাকায়, ২০১৭ সালে সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯০৮।
There are no comments at the moment, do you want to add one?
Write a comment