মুসলিমবিরোধী দাঙ্গায় শ্রীলংকার রাজনীতিবিদ ও পুলিশ জড়িত
সংবাদ বাংলা: শ্রীলংকায় সম্প্রতি ঘটে যাওয়া মুসলিমবিরোধী দাঙ্গায় দেশটির রাজনীতিবিদ ও পুলিশ প্রশাসন জড়িত ছিল। সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসের সমর্থনে কতিপয় বৌদ্ধ রাজনীতিবিদ ও পুলিশের বিশেষ বাহিনীর সদস্য মিলে ক্যান্ডির মুসলিমবিরোধী দাঙ্গা বাধিয়েছিলেন। লন্ডনভিত্তিক আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক বিশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, কর্মকর্তাদের ভাষ্য এবং সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে প্রতিবেদনটি তৈরি করে রয়টার্সের বিশেষ টিম। প্রতিবেদনে দাঙ্গা চলাকালে সরকার নিরাপত্তা বাহিনীর কিছু অংশের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিল বলেও প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য ও উগ্র বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদী প্রচারের মাধ্যমে এ দাঙ্গা আরও বেশি মাত্রায় উস্কে দিয়েছে। বৈচিত্র্য ও সহিষ্ণুতার জন্য পরিচিত শ্রীলংকার পার্বত্য জেলা ক্যান্ডিতে তিন দিন ধরে চলা এ দাঙ্গায় উত্তেজিত বৌদ্ধ জনতা বেশ কয়েকটি মসজিদসহ মুসলমানদের অন্তত ৪৫০টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে; ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাট চালায়। অস্থিরতা মোকাবেলায় জরুরি অবস্থা জারি করে লংকান সরকার, এক সপ্তাহ বন্ধ রাখা হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম।
নির্যাতিত ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পুলিশের একটি আধা-সামরিক ইউনিট, দ্য স্পেশাল টাস্কফোর্সের (এসটিএফ) সদস্যরা মুসলিম আলেম ও ধর্মীয় নেতাদের ওপর হামলা চালায়। সিসিটিভি ফুটেজেও এ বক্তব্যের সত্যতা মিলেছে। দাঙ্গায় আক্রান্ত এক মসজিদের ইমাম এ এইচ রমিজ বলেন, তারা হামলা করতেই এসেছিল। চিৎকার-চেঁচামেচি করছিল; ছিল নোংরা কথাবার্তাও। তারা বলছিল, সব সমস্যার কারণ আমরা মুসলমানরা, আমরা নাকি সন্ত্রাসীদের মতো। উন্মত্ত জনতার হাত থেকে যারা রক্ষা করবে, সেই পুলিশ সদস্যদের হাতে আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগ করেন সেদিন মসজিদটিতে নামাজ পড়তে আসা অনেকে।
এ নিয়ে পুলিশ বলছে, দাঙ্গায় বাহিনীর সদস্য ও রাজনীতিবিদদের ভূমিকা নিয়ে তদন্ত হচ্ছে। পুলিশের মুখপাত্র রুয়ান গুনাসেকারা বলেন, ‘ঘটনার সময়ে পুলিশ সদস্যদের ঘাটতি অনুসন্ধানে’ বিশেষ একটি তদন্ত দলকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় আরেকটি তদন্ত দল দাঙ্গার ঘটনায় রাজনৈতিক কর্মীদের ভূমিকাও খতিয়ে দেখছে বলে জানান তিনি।
There are no comments at the moment, do you want to add one?
Write a comment