লাশ ফেলে দেয়ার পরিকল্পনায় হামলা: ঢাবি ভিসি
সংবাদ বাংলা: লাশ ফেলে বিভীষিকা সৃষ্টি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারকে অচল করার পরিকল্পনায় নিজ বাসভবনে হামলা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান। মঙ্গলবার সকালে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালযের উপাচার্য বাসভবন পরিদর্শনে যাওয়ার পর সাংবাদিকদের সামনে তিনি একথা বলেন। উপাচার্য আখতারুজ্জামান বলেন, দুর্বৃত্তরা চেয়েছিল একটি লাশের রাজনীতি করতে, রক্তের রাজনীতি করতে। এটি একবারেই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে করা হয়েছে… হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে রক্তপাত ঘটিয়ে একটি বিভীষিকাময় পরিবেশ সৃষ্টি করে বিশ্ববিদ্যালয়কে অচল করা, সরকারকে অচল করা, অস্থিতিশীল একটা পরিবেশ সৃষ্টি করা। এটাই আমার কাছে সকল আলামতে মনে হয়। এর সাথে কোটার কোনো সম্পর্ক নেই।
রোববার রাতের হামলার ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আখতারুজ্জামান বলেন, হামলার আগে মেয়েদের একটি মিছিল স্লোগান দিয়ে গেটের সামনে এলেও তারা ভেতরে ঢুকেনি। রাত সোয়া ১টার দিকে পূর্ব দিক থেকে একদল মিছিল নিয়ে এসে হামলা করে জানিয়ে তিনি বলেন, “এখানে গেইটে প্রায় ১৫ মিনিট যাবত হামলা করতে ছিল। তারপর ওয়াল টপকে তারা উপরে উঠে সিসি ক্যামেরা ভেঙে তারপর ভাঙচুর শুরু করলো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালযের উপাচার্য আখতারুজ্জামান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালযের উপাচার্য আখতারুজ্জামান প্রায় ৭০-৮০ জন হাতে লাঠিসোটা নিয়ে ভেতরে ঢুকেই আলো বাতিগুলো ভাঙতে শুরু করে জানিয়ে উপাচার্য বলেন, “তখন আমি বুঝতে পারছি এরা আন্দোলনকারী নয়। তখনই ভাবলাম একটা নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটানোর জন্যই তারা আসছে এবং এটাই এখানে পরিচালিত হবে। “তখন পরিবারে সদস্যরা দিগ্বিদিক ছোটাছোটি শুরু করছে। তখন আমি ভাবছি ওরা বুঝি নিচে ভাংচুর করেই চলে যাবে। এর মধ্যে আমি নিচে যাওয়ার জন্য এগুচ্ছি তখনই তারা উপরে উঠে এসে আমার বেডরুমে ভাংচুর শুরু করলো। এই তাণ্ডবলীলা শুরু করলো। আমার মেয়ে ও স্ত্রী কোনোক্রমে পালানোর পথ পেয়ে বের হয়ে গেল। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ছাত্র এ্ই ঘটনার সাথে জড়িত থাকলে তার কি ধরণের শাস্তি হবে জানতে চাইলে আখতারুজ্জামান বলেন,এটি খুব অমুলক প্রশ্ন। কারো যদি ক্রিমিনাল হিসেবে শাস্তি হয়। অপরাধী হিসেবে বিচারের মুখোমুখি হয়ে শাস্তি হয়, তাহলে বিধান অনুযায়ী সেগুলো রাষ্ট ও সরকারে আইনের মধ্যে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সব ধরণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো দস্যুবৃত্তির স্থান এখানে নাই। যে কোনো ধরণের দস্যু যে কোনো ধরনের দূর্বৃত্ত চিহ্নিত হবে তখন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমনকি তাদের পৃষ্টপোষকদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মানসিক অবস্থা কেমন জানতে চাইলে উপাচার্য বলেন, “বেঁচে আছি এটাই আল্লার রহমত। তিনি বলেন, যারা আমার বাড়িতে পবেশ করলো তাদের মধ্যে থেকে কয়েকজনকে আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই, তারা কিন্তু আমার প্রাণ রক্ষা করেছে।
তবে মুখোশ পরা কয়েকজন আমাকে লাঠি হাতে আক্রমণের, আঘাত দেওয়ার চেষ্টা করেছে।
এই হামলার সময় দুর্বৃত্তদের দমন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পাল্টা ‘অ্যাকশনে’ না গিয়ে কেন নিরব ছিল তার যৌক্তিকতাও তুলে ধরেন উপাচার্য। তিনি বলেন, সিন্ডিকেট যথার্থই বলেছে, রাত ২টার দিকে যদি পুলিশ র্যাব অ্যাকশনে যেত তবে অনেক প্রাণহানি হতো, যেটি কোনোভাবেই কাম্য নয়- দুর্বৃত্তদের এটাই ছিল প্রত্যাশা। পুলিশ এবং র্যাবের শক্তিপ্রয়োগের মাধ্যমে দিয়ে আমরা এই দুর্বৃত্তকে দমন করিনি এবং সেটার জন্য আমরা যে প্রজ্ঞা এবং সাহসী একাগ্রতা এবং নৈতিক মানে উজ্জীবিত থেকেছি এবং বড় আকারের প্রাণহানি যে ঘটেনি সে কারণে সিন্ডিকেট সন্তোষ প্রকাশ করেছে।
কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ এর ব্যানারে আন্দোলনে থাকা শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা রোববার শাহবাগ মোড় অবরোধ করলে পুলিশ তাদের রাবার বুলেট ও কাঁদুনে গ্যাস ছুড়ে সরিয়ে দেয়। কিন্তু এরপর সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে পুরো ক্যাম্পাসে। রাত দেড়টা থেকে ২টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে হামলা চালিয়ে ভ্যাপক ভাঙচুর করা হয়।
There are no comments at the moment, do you want to add one?
Write a comment