সৌদি আরবে অগ্নিকাণ্ডে ৬ বাংলাদেশির মৃত্যুতে শোকের মাতম
সংবাদ বাংলা: সৌদি আরবের হাইল জেলার হোলাইফা শহর এলাকায় অগ্নিকাণ্ডে ৬ বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও একজন। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের বসন্তপুর গ্রামের মরহুম আবদুল হকের দুই ছেলে এমরানুল হক সোহেল (৩৪) ও ইমামুল হক মুন্না (২২)। লক্ষ্মীপুর জেলার কমলনগর উপজেলার করইতোলা বাজার সংলগ্ন চর লরেঞ্চ গ্রামের নেছার আহম্মদের ছেলে জসিম উদ্দিন (২৬) এবং তার ছোট ভাই মো. ইব্রাহিম (২৩)। চৌদ্দগ্রামের গুণবতী ইউনিয়নের দক্ষিণ শ্রীপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে মো. সোহেল (৩০) নিহতদের মধ্যে রয়েছেন। নিহত আরেকজন ফেনীর বিরিঞ্চি এলাকার ইলিয়াস মেম্বারের বাড়ির রফিকুল ইসলামের ছেলে মহিউদ্দিন রাশেদ (৩৫)।
হাইল জেলার হোলাইফা শহরে অগ্নিকাণ্ডে নিহত বাংলাদেশিরা হাইল জেলার হোলাইফা শহরে অগ্নিকাণ্ডে নিহত বাংলাদেশিরা অগ্নিদগ্ধ দেহগুলো পুড়ে যাওয়ায় তাদের শনাক্ত করতে ডিএনএ টেস্টের প্রয়োজন হবে বলে জানিয়েছেন রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবারে লেবার কাউন্সেলর সরওয়ার আলম। হাইল থেকে প্রবাসী বাংলাদেশি আজিজ উল্লাহ সেলিম বলেন, সিগারেটের ধোঁয়া থেকে এই আগুনের সূত্রপাত থেকে তারা জানতে পেরেছেন। হোলাইফা শহর এলাকায় চাকরি করত এমরানুল হক, মুন্না ও সোহেলসহ সাতজন। প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবার রাতে রান্না ও খাওয়া শেষে একই রুমে তারা ঘুমিয়ে পড়েন। কেউ একজন রুমের বারান্দায় সিগারেট খেয়ে ফেলে দেয়। ওই আগুন বিদ্যুতের তারে লেগে পুরো রুমে ছড়িয়ে পড়ে।
এরআগে গত সপ্তাহে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে একটি ভবনে অগ্নিকাণ্ডে ছয় বাংলাদেশি নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়।
শোকের মাতম: সৌদি আরবে অগ্নিকাণ্ডে ছয় বাংলাদেশি নিহতের খবর আসার পর ফেনীর মো. মহিউদ্দিন রাশেদের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম; একমাত্র ছেলের মৃত্যুর খবরে স্ট্রোক করে রাশেদের মা ভর্তি হয়েছেন হাসপাতালে। ফেনীর বিরিঞ্চি এলাকার ইলিয়াস মেম্বারের বাড়ির রফিকুল ইসলামের ছেলে মহিউদ্দিন রাশেদ (৩৫)জীবিকার তাগিদে চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি সৌদি আরবে পাড়ি জমান।
আড়াই মাস বেকার থাকার পর বুধবার তার চাকরিতে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ঠিক তার আগের রাতেই হোলাইফা শহর এলাকার এক বাসায় অগ্নিকাণ্ডে রাশেদসহ ছয় বাংলাদেশির মৃত্যু হয়। দুই সন্তানকে নিয়ে রাশেদের স্ত্রী শিখা মজুমদার এখন গভীর অনিশ্চয়তায় দুই সন্তানকে নিয়ে রাশেদের স্ত্রী শিখা মজুমদার এখন গভীর অনিশ্চয়তায় রাশেদের চাচাতো বোন জুবায়রা ইসলাম টুম্পা জানান, ছেলের মৃত্যুর খবর বুধবার রাতে অসুস্থ হয়ে পড়েন রাশেদের মা কুলফুরের নেছা। ফেনীর ডায়াবেটিক হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা জানান,তার স্ট্রোক হয়েছে।
রাশেদের বাবা রফিকুল ইসলাম পক্ষাঘাতে শয্যাশায়ী দীর্ঘদিন ধরে। সৌদি আরবের ওই ঘটনায় গভীর অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে রাশেদের স্ত্রী শিখা মজুমদার আর তাদের তিন সন্তান জিহান (৭), সাফওয়া (৫) ও আলিফসহ পুরো পরিবার। রাশেদের শাশুড়ি রীনা মজুমদার বলেন, পরিবারের সবার মুখে হাসি ফোটাতে সৌদি আরবে গিয়েছিল ও। কিন্তু সব আশা শেষ হয়ে গেল।
দুই বোন এক ভাইয়ের সংসারে রাশেদ ছিলেন সবার ছোট। একমাত্র ছেলের লাশ যেন দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনা হয়, সেই ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানিয়েছেন তার বাবা রফিকুল ইসলাম।
There are no comments at the moment, do you want to add one?
Write a comment