স্মার্টফোন-ট্যাব কেড়ে নিচ্ছে শিশুদের দৃষ্টি শক্তি
সংবাদ বাংলা: এক দশকের ব্যবধানে, মায়ের কোল থেকেই চোখের রোগ মায়োপিয়া বা চোখের ক্ষীণ দৃষ্টিতে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। অভিভাবকদের কর্মজীবনের ব্যস্ততার ফাঁকে সন্তানের হাতে সহজলভ্য হচ্ছে স্মার্টফোন, ট্যাব। আর এই অতিমাত্রার স্ক্রিন অ্যাক্টিভিটি বড়দের চেয়ে শিশুদের চোখে ৫ গুণ বেশি ক্ষতি করে আক্রান্ত করছে নানা ধরনের রোগে।
মাত্র ৬ বছর বয়সেই মায়োপিয়াই আক্রান্ত হয়েছে নির্ঝরা। দূরের জিনিস ঝাপসা দেখায় মাঝে মাঝেই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হয় পঞ্চম শ্রেণির এই শিক্ষার্থীকে। চিকিৎসকরা বলছেন, দিনের উল্লেখযোগ্য সময় স্মার্টফোনে চোখ রেখেই ক্ষিণ দৃষ্টির সমস্যায় আক্রান্ত হয়েছে নির্ঝরা। শিশুরা বলেন, ‘ইউটিউব দেখি, গেমস খেলি। বিশ্ব সম্পর্ক জানি। স্মার্টফোনে এগুলো বেশি দেখি।’
বাস্তবতা পর্যবেক্ষণ করতে রাজধানীর একটি স্কুলের একটি শ্রেণির দেখা যায়, ‘১৯ জন শিক্ষার্থীর ৭ জনই কোনো না কোনো চোখের সমস্যায় ভুগছে। তবে, আক্রান্তরা ছাড়াও অধিকাংশের সময় কাটে ফেসবুক, ইউটিউব ও ভিডিও গেমসে।’
শিশুরা বলেন, দূর থেকে বোর্ডের লেখা দেখতে পারি না। ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পর তারা বলেছেন, কাছে থেকে টিভি না দেখতে। আর মোবাইল ফোনের বেশি গেমস না খেলতে।
এক দশক আগেও ৮ থেকে ৯ বছরের পর শিশুরা আক্রান্ত হলেও বর্তমানে ২ থেকে ৩ বছর বয়সেই শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে মায়োপিয়ায়। প্রথম থেকেই শিশুদের মোবাইল, ট্যাব ও ভিডিও গেমসের প্রতি চরম আসক্তি তাদের চোখের ছানি, রেটিনার নানা সমস্যাসহ বিভিন্ন মানসিক রোগের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
শিশু চক্ষু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. কাজী সাব্বির আনোয়ার বলেন, ‘শিশুদের মাঠের খেলা বন্ধ হয়ে গেছে। পড়াশোনার অতিরিক্ত চাপ। সূর্যের আলোতে তারা বের হচ্ছে না। যে কোনো ইলেকট্রনিক্সে তাদের আসক্তি বেড়ে যাচ্ছে। এগুলোর কারণে মায়োপিয়া বাড়ছে।’
বংশগত কারণ থাকলেও স্ক্রিন অ্যাকটিভিই মায়োপিয়ার অন্যতম কারণ। তবে এই সমস্যা সমাধানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কেবল স্বল্প কিছু বিদ্যালয়ে চক্ষু পরীক্ষার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক বলেন, ‘উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এতদিন ছিল না আমরা চেষ্টা করছি উপজেলাই এই সুবিধা দেয়ার।’
মায়োপিয়ায় আক্রান্তদের দৃষ্টি চশমা দিয়েও শতভাগ ফেরানো সম্ভব নয়। তাই অন্তত ৬ ফুট দূর থেকে টিভি ও ৩০ সেন্টিমিটার দূর থেকে মোবাইল বা ট্যাব দেখার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
There are no comments at the moment, do you want to add one?
Write a comment