বর্ষবরণে রমনা ও চারুকলা ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা
সংবাদ বাংলা: বাংলা নববর্ষ বরণে চারুকলা অনুষদের মঙ্গল শোভাযাত্রা ও রমনা বটমূলে ছায়ানটের প্রভাতী অনুষ্ঠানকে ঘিরে কয়েক স্তরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাজিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) । পহেলা বৈশাখে পলাশী, চানখারপুল ও নীলক্ষেত এলাকা ব্যারিকেড ব্যবস্থার আওতায় নিয়ে আসা হবে। নিরাপত্তা জোনের আওতায় থাকবে হাতিরঝিল ও রবীন্দ্র সরোবর এলাকা। বৃহস্পতিবার সকালে ডিএমপি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকার পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া জানান, পহেলা বৈশাখে নববর্ষ বরণে রাজধানীর সব উন্মুক্ত আয়োজনকে ঘিরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, সোয়াট, বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিটসহ বিশেষায়িত সবগুলো বাহিনীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে যেকোনো পরিস্থিতি সামাল দিতে।
নববর্ষ বরণে চারুকলা অনুষদের মঙ্গল শোভাযাত্রার বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি এসেছে ইউনেস্কো থেকে। তাই এবার এই শোভাযাত্রা ঘিরে রয়েছে অন্যরকম আগ্রহ। চারুকলা অনুষদ জানিয়েছে, বৈশাখের প্রথম দিন সকাল ৯টায় বের হবে মঙ্গল শোভাযাত্রা। বিভিন্ন লোকজ শিল্প কাঠামো নিয়ে এ শোভাযাত্রা চারুকলার সামনে থেকে শুরু হয়ে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল (সাবেক রূপসী বাংলা) চত্বর ঘুরে চারুকলার সামনে এসে শেষ হবে। শোভাযাত্রার উদ্বোধন করবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান।
রবীন্দ্র সরোবর, রমনা, হাতিরঝিলে জলযান নামানো হবে। ডিএমপির নৌ-টহলের পাশাপাশি উদ্ধারকারী ডুবুরি দলও প্রস্তুত থাকবে। ফায়ার টেন্ডার নিয়ে প্রস্তুত থাকবে একটি দল, থাকবে মেডিকেল টিমও। অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা ও জরুরি মেডিকেল সেবায় কন্ট্রোল রুম প্রস্তুত থাকবে। নববর্ষে ইভ টিজিং প্রতিরোধে ডিএমপি একটি বিশেষ দল গঠন করেছে। তারা ‘ইউনিফর্ম ও সিভিল ড্রেসে’ থাকবে বলে জানান ডিএমপি কমিশনার।
ডিএমপি কমিশনার আরো জানিয়েছেন, মঙ্গল শোভাযাত্রায় কেউ মুখোশ ব্যবহার করতে পারবে না। শোভাযাত্রায় যারা বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র বাজাবেন, তাদের তালিকাও চারুকলা অনুষদ থেকে দিতে হবে ডিএমপিকে। মঙ্গল শোভাযাত্রার মূল প্রতিপাদ্য যেন ব্যাহত না হয়, সেজন্য বাণিজ্যিক কোনো ব্যানার নিয়ে শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকার নির্দেশনাও দিয়েছেন তিনি। কারও সন্তান বা মালামাল হারিয়ে গেলে ডিএমপির ‘লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড’ সেন্টারে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। পরে ডিএমপি কমিশনার জানান, রমনা বটমূলে ছায়ানটের অনুষ্ঠানকে ঘিরে আন্তবেষ্টনী ও বহিবেষ্টনী থাকবে রমনা পার্কে। আর্চওয়েতে তল্লাশির পর তবেই মূল অনুষ্ঠানে ঢুকতে পারবেন আগতরা। শাহবাগ এলাকায় ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠী ও ধানমণ্ডির রবীন্দ্র সরোবরে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের অনুষ্ঠানেও একই ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে বলে জানান তিনি।
গত ৩ এপ্রিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এক সভায় নববর্ষের উন্মুক্ত আয়োজনে সময়সীমা বেধে দেন বিকাল ৫টা পর্যন্ত। এ সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে সাংস্কৃতিক সংগঠন উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী শুক্রবার সারা দেশে প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক সমাবেশের ডাক দিয়েছে।
There are no comments at the moment, do you want to add one?
Write a comment